বগুড়া শহরে বহুল আ’লোচিত মাসহ ধ’র্ষিতা কিশোরীকে মা’রপিট, শ্লীলতাহানি ও মাথা ন্যাড়া করে দেবার মা’মলায় বহিষ্কৃত শ্রমিক লীগ নেতা তুফান সরকার ও পৌর কাউন্সিলর মা’র্র্জিয়া হাসান রুমকিসহ ১২ জনের বি’রুদ্ধে অ’ভিযোগ গঠন হয়েছে।
চার্জশিট দাখিলের দুই বছর পর বৃহস্পতিবার বগুড়ার অ’তিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আহমেদ শাহরিয়ার তারিক শুনানির পর এ অ’ভিযোগ গঠনের আদেশ দেন। আগামী বছরের ১০ মা’র্চ ৫ জনের সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য হয়েছে।
একজনের বি’রুদ্ধে অ’ভিযোগ প্রমাণ না হওয়া তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
আ’দালতের এপিপি আসলাম আঙ্গুর এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
অ’পর অ’ভিযুক্তরা হলেন তুফান সরকারের স্ত্রী’ তাসমিন রহমান আশা, শাশুড়ি লাভলী রহমান রুমি, আত্মীয় আঞ্জুয়ারা বেগম, তুফানের ক্যাডার মেহেদী হাসান রূপম, সামিউল হক শিমুল, আতিকুর রহমান আতিক, মো. মুন্না, আলী আজম দিপু, এমা’রত আলম খান ওরফে জিতু মিয়া ও নাপিত জীবন রবিদাস যতীন।
তুফানের শ্বশুর জামিলুর রহমান রুনুকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
নির্যাতিত তরুণীর মায়ের গত ২০১৭ সালের ২৯ জুলাই সদর থানায় দায়ের করা মা’মলা ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনায় জানা যায়, তুফান সরকার ওই বছরের ১৭ জুলাই কিশোরীকে (১৭) ভালো কলেজে ভর্তির নামে ক্যাডার দিয়ে তার বগুড়া শহরে চকসুত্রাপুর চামড়া গুদাম লেনের বাড়িতে নিয়ে যান। এরপর তাকে সেখানে ধ’র্ষণ করা হয়। ধ’র্ষনের পর তাকে জন্মনিয়ন্ত্রণ ওষুধ খাওয়ানো হয়।
ঘটনাটি তুফানের স্ত্রী’ আশা জানতে পেরে ক্ষুব্ধ হন। তিনি স্বামীকে শাসন না করে ঘটনাটি তার বোন বগুড়া পৌরসভার সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর মা’র্জিয়া হাসান রুমকির সঙ্গে পরাম’র্শ করেন। তারা ওই কিশোরী ও তার মাকে শায়েস্তা করার পরিকল্পনা করেন।
আশা ২৮ জুলাই আ’সামি মুন্না, আতিক, দিপু, রুপম ও শিমুলদের সহযোগিতা মা ও মেয়েকে তুলে নিয়ে রুমকির বাদুড়তলার বাড়িতে আনেন। এরপর মা ও মেয়েকে লোহার পাইপ দিয়ে মা’রপিট করা হয়।
এছাড়া আশা ও রুমকির নির্দেশে ক্যাডাররা কিশোরীর শ্লীলতাহানী করে। আর এ নি’র্যাতনের পুরো দৃশ্য মোবাইল ফোনে ধারণ করা হয়েছিল। এতেও তাদের রাগ না কমলে নাপিত যতীনকে ডেকে এনে কিশোরী ও তার মায়ের মাথা ন্যাড়া করে দেয়া হয়।
এরপর তাদের বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বগুড়া শহর ছেড়ে যেতে হুমকি দেয়া হয়েছিল। প্রতিবেশি এক ব্যক্তি ঝুঁ’কি নিয়ে মা ও মেয়েকে উ’দ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাস*পাতালে ভর্তি করে দেন।
এদিকে ঘটনাটি জানাজানি হলে শুধু বগুড়ায় নয়, সারাদেশে তোলপাড় শুরু হয়। তুফানকে শ্রমিক লীগ থেকে বহিস্কার ও কাউন্সিলর রুমকিকে পৌরসভার কাউন্সিলর পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
মা’মলা’টি ত’দন্ত শেষে সদর থানার তৎকালীন ইন্সপেক্টর (অ’পারেশন) ২০১৭ সালের ১১ অক্টোবর অ’তিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আ’দালতে নারী ও শি’শু নি’র্যাতন দমন আইনে ১০ জনের বি’রুদ্ধে ও মাথা ন্যাড়া করে দেয়ার মা’মলায় ১৩ জনের বি’রুদ্ধে পৃথক চার্জশিট দাখিল করেন।
একটি মা’মলা নারী ও শি’শু নি’র্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে এবং অ’পরটি অ’তিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আ’দালতে রয়েছে।
আ’দালত সূত্র জানায়, মা’মলায় ১৩ আ’সামির মধ্যে একজনকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। ১২ জনের মধ্যে শুরু থেকেই আ’সামি আঞ্জুয়ারা বেগম পলাতক রয়েছেন। ধ’র্ষণ মা’মলায় তুফান সরকার ও মাথা ন্যাড়া করে দেয়ার মা’মলায় শিমুল জে’লে রয়েছেন।
শিমুল ৭ নভেম্বর জামিন চাইলে আ’দালত নামঞ্জুর করেন। অন্য ১০ জন জামিনে আছেন।